নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চাইছেন স্থানীয় তিন যুবলীগ নেতা। জানা গেছে, সালিশবৈঠকে ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত সাখাওয়াত (৬৫) উল্যাকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ঘটনার সুস্থ বিচার দাবি করেছেন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরে বাবার জন্য বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে দোকানে যাচ্ছিল ভিকটিম শিশুটি। পথে বৃষ্টি শুরু হলে স্থানীয় মোবারক দারোগার বাড়িতে আশ্রয় নেয় সে। এদিকে বৃষ্টির কারণে আগে থেকেই ওই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের ঘোষকাতমা গ্রামের সাখাওয়াত উল্যা। ওই সময় তিনি শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। পরে শিশুটির চিৎকারে দারোগা বাড়িসংলগ্ন চা দোকান থেকে লোকজন এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় একদল যুবক সাখাওয়াত উল্যাকে মারধর করে পার্শ্ববর্তী মির্জা নগর কাশেম চৌধুরীর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় যুবলীগ নেতা আজম, সুমন ও ইয়াসিন স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে সাখাওয়াতকে ছেড়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে গত শুক্রবার সালিশবৈঠক ডাকে যুবলীগের ওই তিন নেতা। সেখানে তারা সাখাওয়াতকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর পর ৫০ হাজার টাকা নগদ নিয়ে সাখাওয়াতকে ছেড়ে দেয়া হয়। ভুক্তভোগী শিশুর বাবা যুগান্তরকে জানান, ঘটনার সত্যতা পেয়ে গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি সাখাওয়াত উল্যাকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে। যার কোনো কিছুই আমাদের জানানো হয়নি। এ বিষয়ে জানতে যুবলীগের ওই তিন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকরামুল হক বিপ্লব যুগান্তরকে জানান, ‘সেখানে কোনো কমিটি নেই। তারা দলের নাম ভাঙিয়ে নানা অপকর্ম করে বেড়ায়।’এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে ওই তিন যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারি অভিযুক্ত সাখাওয়াতকে পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক চেয়ারম্যান জানান, ধর্ষণচেষ্টা ও জরিমানা করে অভিযুক্ত ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না এলাকাবাসী। যে কোনো সময় এলাকায় অঘটন ঘটতে পারে।
তবে সোনাইমুড়ী থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে যুগান্তরকে জানান, এ ব্যাপারে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply