করোনায় সামান্য আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহের ১০ দিন পর ভাইরাসটি তার দেহে বা বাইরে থাবা বিস্তার করতে পারে না। ব্যাপকভাবে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা দেয়ার ১৭ দিন পর করোনা সংক্রমণ ঘটাতে পারে না। কাজেই মাইল্ড বা সামান্য আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহের ১০ দিন পর এবং ব্যাপকভাবে আক্রান্তদের উপসর্গ দেখা দেয়ার ২১ দিন পর দ্বিতীয়বারের পরীক্ষা ছাড়াই তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিশতে পারবেন। এতে ওই রোগীর মাধ্যমে নতুন কোনো সংক্রমণের ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে তারা করোনার প্রতিরোধের পাশাপাশি প্রতিকারমূলক সক্ষমতা বাড়ানোর দিকেও জোর দিয়েছেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মো. রিদওয়ানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘করোনার ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্পষ্ট কিছু নির্দেশনা আছে। সেখানেই কিছুদিন আগে বলা হয়েছে, সামান্য বা মাইল্ড রোগীদের ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষার জন্য সেম্পল সংগ্রহের দিন থেকে পরবর্তী ১০ দিন পর এবং সিভিয়ার রোগীদের ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা দেয়ার ১৭ দিন পর করোনাভাইরাস আর সংক্রমণ করতে পারে না। সেদিক থেকে সামান্য বা মাইল্ড রোগীদের ক্ষেত্রে সেম্পল জমা দেয়ার ১০ দিন পর এবং সিভিয়ার রোগীদের ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা দেয়ার ২১ দিন পর দ্বিতীয়বারের জন্য কোনো পরীক্ষা ছাড়াই তারা আইসোলেশন থেকে বেরিয়ে পরিবারের সঙ্গে মিশে যেতে পারবেন। এতে ওই রোগীর মাধ্যমে নতুন কোনো সংক্রমণ হবে না।’
১০ বা ২১ দিন পর করোনা আক্রান্ত রোগী নেগেটিভ হলেন কি না, তা জানার জন্য দ্বিতীয়বার পরীক্ষার প্রয়োজন আছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রফেসর মো. রিদওয়ানুর রহমান বলেন, নির্দেশনায় দ্বিতীয়বার পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই বলে বলা হয়েছে।
এদিকে করোনা আক্রান্তরা সুস্থ হওয়ার পর শরীরে যে এন্টিবডি তৈরি হয় তা কতদিন থাকে, তা নিয়ে জনমনে জিজ্ঞাসা আছে। তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন অপর এক বিশেষজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. সাইফুল্লাহ মুনশী যুগান্তরকে বলেন, করোনায় সুস্থ হওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে এন্টিবডি কতদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়, তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি। একেক জনের ক্ষেত্রে এটা একেক রকম দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে গবেষণা চলছে।
করোনার সংক্রমণ রোধে কী করা যেতে পারে জানতে চাইলে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, আসলে প্রতিরোধের পাশাপাশি এখন প্রতিকারমূলক সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়ও বের করতে হবে। করোনার টেস্টিং বাড়ানো, আক্রান্তদের আইসোলেশন করা, তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া, আইসিইউ সেবা বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে।
Leave a Reply