নোটিশ :
জরূরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: সারাদেশ ব্যাপী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন: 01753741909, সিভি পাঠান:  crimejanata24@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ :
হিজলায় সেনাবাহিনী ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম আজিম। হিজলায় মৎস্য দপ্তরের যৌথ অভিযানে ২০ জন আটক। হিজলা উপজেলায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালিত। আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা চিঠির জবাবে সরকারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন গত ২৯ জুলাই ফলকার টুর্ককে চিঠি পাঠিয়েছেন। হিজলায় সুফিয়ান হত্যার আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে হিজলা উপজেলায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় । তীব্র তাপদাহ থেকে বাঁচতে হলে সবুজ বনায়নের বিকল্প নেই, ড. শাম্মী আহমেদ এমপি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আজ বিকাল ৪টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
এখন পর্যন্ত শহিদ বুদ্ধিজীবী হিসাবে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেলেন ৫৬০ জন শহিদ বুদ্ধিজীবী।

এখন পর্যন্ত শহিদ বুদ্ধিজীবী হিসাবে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেলেন ৫৬০ জন শহিদ বুদ্ধিজীবী।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে কালরাতের আগে ও পরে বাঙালি নিধনের ঘটনার একটি বড় অংশ জুড়ে আছেন জাতির সূর্যসন্তান শহিদ বুদ্ধিজীবীরা। রোববার চতুর্থ ধাপে আরও ১১৮ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এই নিয়ে চার ধাপে এখন পর্যন্ত শহিদ বুদ্ধিজীবী হিসাবে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেলেন ৫৬০ জন শহিদ বুদ্ধিজীবী।

এই তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে যশোর এবং মানিকগঞ্জের বুদ্ধিজীবী বেশি। তার মধ্যে যশোরের ৩৭ জন এবং মানিকগঞ্জে ৩৬ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী হত্যার শিকার হওয়া বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে নওগাঁর ২৮ জন এবং ২৫ জন সিরাজগঞ্জের। তার পরের অবস্থানেই ঢাকায় শহিদ বুদ্ধিজীবীরা। গবেষকরা বলছেন-ঢাকা, চট্টগ্রামের বাইরে অনেক বুদ্ধিজীবী নিজ এলাকাতেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ৩৮৬ জন মুসলমান, ১৬৭ জন হিন্দু, ৩ জন বৌদ্ধ এবং ৩ জন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ছিলেন মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক। এর পরেই পেশার দিক থেকে আছেন-চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, সরকারি-বেসরকারি কর্মচারী, সংস্কৃতিসেবী ও শিল্পীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। চার বারে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাওয়া ৫৬০ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় আছেন ভারত ও ইতালির ৯ শহিদ বুদ্ধিজীবী। ৪৬ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর এলাকার ঠিকানা পাওয়া যায়নি। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬১টি জেলাতেই বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের তথ্য পাওয়া যায়।

চতুর্থ ধাপে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকার প্রসঙ্গে শহিদ বুদ্ধিজীবী তালিকা প্রণয়ন জাতীয় কমিটির সদস্য এবং গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি ড. চৌধুরী শহীদ কাদের যুগান্তরকে বলেন, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের চতুর্থ ধাপের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপের যে তালিকা আমরা করেছি সেখানে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি জেলার পরিচিত বুদ্ধিজীবী যাদের বিবরণ আমরা পেয়েছি তারা আছেন। কিন্তু এই চতুর্থ তালিকাটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ, এই তালিকার বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই আমাদের অজানা। তারা বিভিন্ন প্রান্তিক পর্যায়ে বুদ্ধিভিত্তিক কাজ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধকে প্রভাবিত এবং ত্বরান্বিত করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। গত ৫০ বছরে প্রান্তিক এই বুদ্ধিজীবীদের কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছিল না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় স্বাধীনতার ৫০ বছর পর তাদের প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিল।

তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবীদের এ তালিকাগুলো হওয়ার ফলে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার বড় একটি ডকুমেন্টেশন হলো। যেটি আমাদের আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিতে সাহায্য করবে। একটি দেশের কত বিরাট সংখ্যক বুদ্ধিজীবীকে পাকিস্তানিরা হত্যা করেছে তা অনুমেয়। শুধু তাই নয় মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও ইতালির বুদ্ধিজীবীদেরও হত্যা করা হয়। তাই এ গণহত্যা আন্তর্জাতিক অপরাধের বিষয়টিকেও জোরালোভাবে তুলে ধরে।

শহিদ বুদ্ধিজীবীর এবারের তালিকায় একটি বিশেষ দিক, মধু’দাকে বুদ্ধিজীবী হিসাবে বিবেচনা করা। জানা গেছে, কমিটি আলোচনা শেষে ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী’র সংজ্ঞার আলোকে মধুসূদন দে (মধু’দা) কে সমাজসেবী হিসাবে পেশাভুক্ত করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, জাতির পিতাই মধু’দাকে শহিদ বুদ্ধিজীবী মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তিনি ছাত্রদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করতেন। তাদের লেখাপড়া এবং অন্যান্য বিষয়ে তার অবদান অসামান্য। মধু’দা তার ক্যান্টিন ব্যবসা থেকে প্রাপ্ত আয় থেকে তার গ্রামের সাধারণ মানুষদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন। তিনি এলাকায় সমাজমনস্ক একজন সেবক হিসাবেও পরিচিত ছিলেন।

তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন শহিদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নের জাতীয় কমিটির অন্যতম সদস্য মুক্তিযুদ্ধ গবেষক এবং ‘১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়াম্যান ড. মুনতাসীর মামুন। তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমি বহুদিন কমিটির মিটিংয়ে যাই না। কিন্তু যারা কমিটিতে আছেন তারা বিজ্ঞ মানুষ। আমি মনে করি শহিদ বুদ্ধিজীবীর যে সংজ্ঞা তৈরি করা হয়েছে সে অনুযায়ী চলা উচিত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম যদি করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে আরও ব্যতিক্রম করতে হবে। সেক্ষেত্রে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে।

তিনি আরও বলেন, যদি ব্যতিক্রম বা অন্যকিছু করতেই হয় তাহলে কমিটি সংজ্ঞাটি বাদ দিয়ে দিতে পারে। বাদ দিয়ে কমিটি যাদের মনে করে তাদের শহিদ বুদ্ধিজীবীর স্বীকৃতি দিতে পারে।

এদিকে রোববার সংবাদ সম্মেলনে ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের মধ্যে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী। তিনি বলেন, চতুর্থ দফার তালিকাই শেষ। আরও যদি কোনো আবেদন থাকে, কিছু রিভিউতেও আছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ৫৬০ জনের তালিকা ঘোষণা করছি। সর্বশেষ ও চূড়ান্ত তালিকা ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করব। এটি খসড়া চূড়ান্ত তালিকা ধরে নিতে পারেন।

মন্ত্রী বলেন, তালিকা প্রণয়নে আমাদের কোনো শৈথিল্য ছিল না। তারপরও মানুষ হিসাবে ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে। আমাদের জানার বাইরেও থাকতে পারে। আমরা সবজান্তা নই। সবার পক্ষে আবেদনও আসেনি। কারও কাছে প্রাথমিক তথ্য থাকলে আমাদের দিলে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে সেগুলো অবশ্যই অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে বিবেচনা করে চূড়ান্ত করব। ২০২১ সালের ২১ মার্চ শহিদ বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেসব সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, রাজনৈতিক, সমাজসেবী, সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র, নাটক, সংগীত ও শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কিংবা তাদের সহযোগীদের হাতে শহিদ কিংবা চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন, তারা শহিদ বুদ্ধিজীবী হিসাবে বিবেচিত হবেন।

শহিদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ের জন্য সরকার ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর যাচাই-বাছাই কমিটি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এই কাজে ১১ সদস্যের একটি কমিটিকে সহায়তা করতে আরও দুটি উপকমিটি করা হয়। এখন পর্যন্ত যাচাই-বাছাই করে চার পর্যায়ে ৫৬০ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে ১৯১ জন, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২২ সালের ২৯ মে মাসে প্রকাশ করা হয় ১৪৩ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর নাম। তৃতীয়বারে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি ১০৮ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। সর্বশেষ চতুর্থ ধাপে রোববার ১১৮ জন শহিদ বুদ্ধিজীবী রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেলেন।

চতুর্থ দফার শহিদ বুদ্ধিজীবী তালিকায় ৩ জন সাহিত্যিক, একজন বিজ্ঞানী, একজন চিত্রশিল্পী, ৫৪ জন শিক্ষক, ৪ জন আইনজীবী, ১৩ জন চিকিৎসক, ৩ জন প্রকৌশলী, ৮ জন সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, ৯ জন রাজনীতিক, ১৩ জন সমাজসেবী রয়েছেন। এছাড়া সংস্কৃতিসেবী এবং চলচ্চিত্র, নাটক, সংগীত এবং শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৯ জন ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে শহিদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 Crimejanata24.Com
Design & Development: Hostitbd.Com