চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো। হাবিবুর রহমান জানান, বুধবার (১০ জুন) দুপুরে মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের সাইটমারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আংশুর আলম চকরিয়া উপজেলার ধেমুশিয়া ইউনিয়নের চকুরিটিটিকা পাড়ার মৃত মনির উল্লাহর ছেলে। তিনি ধেমুশিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। চকরিয়া থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১২ টিরও বেশি মামলা রয়েছে।
তবে এই ঘটনার পরপরই আনশুর আলমকে যুবলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
নিহতনির্যাতনের শিকার বৃদ্ধ নুরুল আলম (৭২) ধেমুশিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।
এর আগে ৩ জুন চক্রিয়ার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ অভিযান চালায় এবং এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে মোহাম্মদ বেলাল, কেশার উদ্দিন ও মোহাম্মদ ফারুক নামে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
প্রবীণ নুরুল আলম ২৪ মে ঢেমুশিয়া স্টেশন থেকে শপিং শেষে ইজিবাইক (টমটম) নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে তাকে থামিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। নুরুল আলমকে( ৭২) ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আংশুর আলম নগ্ন করে পিটিয়ে মেরেছে। মারধরের সময়, বৃদ্ধের পরা লুঙ্গি এবং গেঞ্জি টেনে টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল, পাশাপাশি আপত্তিজনক ভাষাও ব্যবহার করা হয়েছিল। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন যুবক তাদের মোবাইল ফোনে মারধরের দৃশ্যটি রেকর্ড করেন। আশেপাশের বেশ কয়েকটি যুবক ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করলেও নুরুল আলমকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। তবে এই ঘটনার ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
এই ঘটনার পরে, ৩১ মে রাতে ভুক্তভোগীর ছেলে আশরাফ হোসেন চকরিয়া থানায় যুবলীগ নেতা আনশুর আলমসহ ছয়জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেন।
ওসি হাবিবুর জানান, বুধবার বিকেলে মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের সাইতমারা এলাকার একটি বাড়িতে আংশার আলম আত্মগোপনে ছিলেন। এমন খবর পাওয়ার পরে চকরিয়া পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ তাকে ধাওয়া করে এবং গ্রেপ্তার করে।
ধেশুশিয়া ইউনিয়নের ছায়াকুটিক্কা পাড়ার বৃদ্ধ নুরুল আলমকে মারধরের মূল অপরাধী ছিলেন আনশুর আলম চক্রিয়া। তিনি এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার দ্বিতীয় আসামি। প্রবীণ নুরুলের ছেলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ আধিকারিক আরও জানান, ৪/৫ জন অজ্ঞাতপরিচয় লোকের নাম উল্লেখ করে ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনার তদন্ত শেষে ২ জুন মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এর আগে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি ওসি জানিয়েছেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ অভিযুক্তদের পাশাপাশি ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছিল।
ওসি আরও বলেছিলেন, আঞ্জুর আলম চিহ্নিত ডাকাত ও সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১২ টি মামলা রয়েছে।
এদিকে, যুবলীগ নেতা আংশুর আলম যিনি এই ঘটনার মূল অপরাধী ছিলেন, তিনি বলেন, চৌকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কাউসার উদ্দিন কছির ছিলেন একজন সুযোগ প্রার্থী এবং অনুপ্রবেশকারী। তিনি জানান, সম্প্রতি অঙ্কুরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ডাকাতি সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল। সংস্থার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা এর আগে তার অপকর্ম সম্পর্কে সচেতন ছিলেন না।
ঘটনাটি শোনার পরে আংশুরকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে উপজেলা যুবলীগের নেতা জানান।
Leave a Reply