নোটিশ :
জরূরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: সারাদেশ ব্যাপী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন: 01753741909, সিভি পাঠান:  crimejanata24@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ :
হিজলায় সেনাবাহিনী ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম আজিম। হিজলায় মৎস্য দপ্তরের যৌথ অভিযানে ২০ জন আটক। হিজলা উপজেলায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালিত। আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা চিঠির জবাবে সরকারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন গত ২৯ জুলাই ফলকার টুর্ককে চিঠি পাঠিয়েছেন। হিজলায় সুফিয়ান হত্যার আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে হিজলা উপজেলায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় । তীব্র তাপদাহ থেকে বাঁচতে হলে সবুজ বনায়নের বিকল্প নেই, ড. শাম্মী আহমেদ এমপি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আজ বিকাল ৪টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
কনডেম সেলে বিমর্ষ মিন্নির গায়ে কয়েদির শাড়ি

কনডেম সেলে বিমর্ষ মিন্নির গায়ে কয়েদির শাড়ি

‘বাবা আমি নির্দোষ। এই খুনের সঙ্গে জড়িত নই। সত্যের জয় এক দিন হবেই। তোমরা ধৈর্য ধর। দ্রুত আপিল করে আমাকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করো। কনডেম সেলে আমি ভালো নেই। একটি নির্জন কক্ষে রাখা হয়েছে আমাকে। বরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কারাগার থেকে ফোন করে তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরকে এমন আকুতি জানান। কারাগারের একটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বুধবার রিফাত হত্যা মামলার রায়ে তার স্ত্রী মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এরপর থেকে মিন্নিসহ ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সবাইকে বরগুনা জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে। কারাগার সূত্রে জানা গেছে, সেখানে মিন্নি একাকী একটি কনডেম সেলে রয়েছেন। ফাঁসির দণ্ড পাওয়া নারী আসামিদের যে কনডেম সেলে রাখা হয়, বরগুনার এই জেলে এখন মিন্নি ছাড়া সেখানে আর কেউ নেই। কারণ ওই কারাগারে নারী বন্দিদের মধ্যে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত একমাত্র আসামি মিন্নি। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কারাগার থেকে তার বাবার সঙ্গে কথা বলেন মিন্নি। ৫ মিনিটের এই কথোপকথনের অধিকাংশ সময়জুড়ে মিন্নি তার বাবাকে দ্রুত আপিল করার কথা বলেন। মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর সমকালকে বলেন, মিন্নি ফোনে বলেছে, সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। জেলাখানায় সে ভালো নেই। মিন্নির বাবা আরও জানান, ষড়যন্ত্র করে আমার মেয়েকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
আমি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। মোজাম্মেল হোসেন আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ ভিডিওতে দেখেছে আমার মেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার স্বামী রিফাত শরীফকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। সে একাই রিফাতকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবু এই মামলায় আমার মেয়েকে ফাঁসানো হলো।’
বরগুনার কারাগার সূত্র জানায়, কারাগারে গতকাল পর্যন্ত মোট বন্দির সংখ্যা ছিল ৫১২ জন। তাদের মধ্যে ১৮ জন নারী বন্দি। রিফাত হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ছয় আসামি ছাড়া অন্য কোনো মামলার ফাঁসির আসামি বরগুনার কারাগারে নেই।
কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, কনডেম সেলে মিন্নি একা। ওই সেলের পাহারায় রয়েছেন একজন নারী কারারক্ষী। কারাবিধি অনুযায়ী ফাঁসির আসামি হিসেবে মিন্নিকে কয়েদির পোশাক দেওয়া হয়েছে। সাদা রঙের শাড়ির ওপর নীল স্ট্রাইপ রয়েছে। এটা সব নারী ফাঁসির আসামিদের দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী দুটি শাড়ি তাকে সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া তাকে দেওয়া হয়েছে একটি বালিশ ও কম্বল। আগে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের বালিশ দেওয়া হতো না। কারাবিধি অনুযায়ী তিনটি কম্বল দেওয়া হতো। তার মধ্যে একটি কম্বলকে বালিশ হিসেবে ব্যবহার করতেন আসামিরা। এখন একটি কম্বল কমিয়ে একটি বালিশ সরবরাহ করা হচ্ছে।
জেল সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী মিন্নি ছাড়া অন্য পাঁচ বন্দিকেই কনডেম সেলে থালা, বাটি ও কম্বল দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি আসামিকে কারাগারের পক্ষ থেকে দুই সেট পোশাক দেওয়া হয়েছে।
জেলা সুপার আরও বলেন, এই মুহূর্তে বরগুনা জেলা কারাগারে নারী বন্দিদের মধ্যে একমাত্র মিন্নিই কনডেম সেলে আছেন। এ ছাড়া রিফাত হত্যা মামলার অপর পাঁচ পুরুষ আসামিকেও কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। এই পাঁচ পুরুষ বন্দি ছাড়া বরগুনার কারাগারের কনডেম সেলে আর অন্য কোনো পুরুষ বন্দিও নেই।

কনডেম সেলের বন্দিরা কখনও কক্ষ থেকে বাইরে বের হতে পারেন না। এই বন্দিরা মাসে একবার তার স্বজনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বজনের সঙ্গে বন্দিদের সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে।
কারাগার সূত্র জানায়, মিন্নিসহ ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের সকালে ডাল, সবজি, রুটি; দুপুরে ভাত বা মাছ দেওয়া হয়। আবার কখনও ভাত ও মাংস দেওয়া হয়। রাতেও দুপুরের মতো একই ধরনের খাবার থাকে।
বুধবার রায় ঘোষণার পর ছয় আসামিকে বিকেল ৩টার দিকে কারাগারে নেওয়া হয়। রায় শোনার পর থেকেই আয়শা বিষণ্ণ হয়ে পড়েন। সেই বিষণ্ণতা কনডেম সেলে বেড়েছে। রাতে খাবারদাবার দেওয়া হলে সামান্য খেয়েছেন। বাকি পাঁচ আসামি স্বাভাবিক রয়েছেন বলে সূত্রে জানা গেছে।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শাহ নেওয়াজ রিফাতকে নৃশংসভাবে ধারালো দা দিয়ে কোপানো হয়। হাসপাতালে তিনি মারা যান। পর দিন রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকে এক নম্বর সাক্ষী করা হয়েছিল। এর মধ্যেই ২ জুলাই মামলার প্রধান সন্দেহভাজন সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
গত বুধবার বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়। এতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, মো. রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান ও নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। অন্যদিকে, খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর ও কামরুল ইসলাম সায়মুন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024 Crimejanata24.Com
Design & Development: Hostitbd.Com