মস্কো অভিযোগ করেছে, ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় নৌবহরের সদর দফতরে হামলায় ইউক্রেনকে সহযোগিতা করেছে কিয়েভের পশ্চিমা মিত্ররা। বুধবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নারী মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, পশ্চিমাদের গোয়ন্দা তথ্য, ন্যাটোভুক্ত দেশের উপগ্রহ ও গোয়েন্দা বিমান নৌবহরের সদর দফতরে হামলায় কাজে লাগানো হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
মারিয়া জাখারোভা এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, কোনও সন্দেহ নেই অত্যাধুনিক পশ্চিমা গোয়েন্দা ব্যবস্থা, ন্যাটোর উপগ্রহ ও গোয়েন্দা ব্যবহার করে এই হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আর বাস্তবায়ন করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার পরামর্শ ও তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেছেন, এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর ব্যর্থ পাল্টা আক্রমণের ওপর থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেওয়া, মানুষকে ভয় দেখানো এবং সমাজে আতঙ্ক ছড়ানো।
মস্কো বারবার দাবি করে আসছে, কিয়েভকে অস্ত্র ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করে এবং রুশ স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনায় ইউক্রেনীয় সেনাদের সহযোগিতা করে ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো মিত্ররা।
সত্যতা নিশ্চিত হওয়া খবরে দাবি করা হয়েছে, হামলায় স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহ করেছে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স।
জাখারোভার সমালোচনার আগে রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের উপ-প্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ মঙ্গলবার বলেছিলেন, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র আব্রামস ট্যাংক পাঠিয়ে ও অজ্ঞাত সংখ্যক দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ন্যাটোকে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার কাছাকাছি নিয়ে আসছে।
সোমবার ইউক্রেনের স্পেশাল ফোর্স তাদের টেলিগ্রামে দাবি করেছিল, রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় নৌবহরের সদর দফতরে শুক্রবার চালানো হামলায় ৩৪ রুশ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন নৌবহরের কমান্ডার ভিক্টর সোকোলভ। হামলায় আরও ১০৫ জন আহত হয়েছেন। তবে রাশিয়া দুটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যাতে সোকোলভকে দেখা গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। এর ফলে ইউক্রেনের এই দাবির সত্যতা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ক্রিমিয়া দখল করে মস্কো। এই দখলকে স্বীকৃতি দেয়নি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এখানে রাশিয়ার কৃষ্ণ সাগরীয় নৌবহর মোতায়েন রয়েছে। ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে ক্রিমিয়াকে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ রসদ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে রাশিয়া। রুশদের দখল থেকে ভূখণ্ডটি পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।