চীন নয়, মূলত ইউরোপ থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো।
তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের আদেশটি অনেক পরে এসেছে, এরমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। খবর আল আরাবিয়ার।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য নিউইয়র্কের গভর্নর বলেন, শুরুতে চীনের সঙ্গে ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার মধ্য দিয়ে সামনের দরজা ঠিকই বন্ধ করা হয়েছিল। তবে পেছনের দরজা খুলে রাখা হয়েছিল। যখন টের পাওয়া গেছে, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। এখন দেখতে হবে এমন যাতে আর না হয়।
অ্যান্ড্রু কুমো আরও বলেন, জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে নিউইয়র্ক ও নিউজার্সির বিমানবন্দরগুলোতে ইউরোপ থেকে ১ হাজার ৩০০ ফ্লাইট এসেছে। এসব ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন প্রায় ২২ লাখ। এদের মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ ঘটেছে বলে এখন মনে করা হচ্ছে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে। গত দশ দিনে দেশটিতে কোভিড-১৯ মহামারীতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৩৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৩৮ হাজার ৭৬৪ জন। খবর এনডিটিভির।
এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫২ হাজার ১৮৫ জন। মৃত্যুর এ সংখ্যা কেবল হাসপাতালে মারা যাওয়া রোগীদের।
অনেকে বাড়িতেও অসুস্থ্য হয়ে মারা যাচ্ছেন। তাদেরসহ হিসাব করলে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ১ হাজার ৯৫৪ জন। গত ১০ দিন ধরে গড়ে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। ফলে ২৫ হাজার থেকে ১০ দিনেই লাফিয়ে ৫২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে মৃতের সংখ্যা। দেশটিতে করোনায় ৪০ ভাগ মানুষই মারা গেছে নিউইয়র্কে।
এর পরই আছে নিউজার্সি, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়া ও ম্যাসাচুসেটস।
করোনাভাইরাসে যতটা সংখ্যক মার্কিন নাগরিক মারা গেছে, তা কোরীয় যুদ্ধেও মারা যায়নি। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত চলা ওই যুদ্ধে ৩৬ হাজার ৫১৬ মার্কিন নাগরিক মারা যায়।
বিশ্বজুড়ে গত চার মাস ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছে প্রাণ ঘাতী করোনাভাইরাস। চীনের শিল্প নগরী উহানকে এ মহামারীর উৎপত্তিস্থল বলা হলেও এর প্রকোপ এখন ইউরোপ-আমেরিকায়ই সবচেয়ে বেশি।
Leave a Reply