১৯৯২-৯৬ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করা অধ্যাপক এমাজউদ্দিন সর্বশেষ ইউনির্ভাসিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) উপাচার্য ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, “গত রাত আড়াইটার দিকে স্যার অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। উনার স্ট্রোক হয়েছিল। ভোর পৌনে ৬টায় আইসিইউতে মারা যান।”
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের জন্ম ১৯৩২ সালে অবিভক্ত বাংলার মালদহে। ভারত ভাগের পর তার পরিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলে আসে।
শিবগঞ্জের আদিনা সরকারি ফজলুল হক কলেজ ও রাজশাহী কলেজে পড়ালেখা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এমাজউদ্দীন। তিনি ফজলুল হক হলের নির্বাচিত ভিপিও ছিলেন।
স্নাতকোত্তর শেষ করে রাজশাহী কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে এমাজউদ্দীনের পেশাজীবনের শুরু।
পরে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে এসে ১৯৭০ সলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন এমাজউদ্দীন। তিনি ডক্টরেট করেন কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে।
দীর্ঘদিন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা এমাজউদ্দীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রেভিসির দায়িত্বও পালন করেছেন। ১৯৯২ সালে তাকে দেওয়া হয় উপাচার্যের দায়িত্ব। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন।
১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরের পর ইউনির্ভাসিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভে (ইউডা) যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির প্রথম সরকারের সময় ১৯৯২ সালে শিক্ষা ক্ষেত্রের অবদানের জন্য একুশে পদক পান এমাজউদ্দীন আহমদ।
সরাসরি বিএনপিতে না থাকলেও একজন উপদেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন সময়ে তিনি দলটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। বিএনপি সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গঠিত শত নাগরিক কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও তিনি ছিলেন।
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কথা, মধ্যযুগের রাষ্ট্র চিন্তা, তুলনামূলক রাজনীতি: রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, বাংলাদেশে গণতন্ত্র সংকট, সমাজ ও রাজনীতি, গণতন্ত্রের ভবিষ্যত, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও জাতীয় নিরাপত্তাসহ অর্ধশতাধিক বই লিখেছেন।
তার স্ত্রী সেলিমা আহমদ ২০১৬ সালেই মারা গেছেন। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন এই দম্পতি।
এমাজউদ্দীনের মেয়ে অধাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন জানান, শুক্রবার দুপুরে জুমার পর কাঁটাবন ঢাল মসজিদে তার বাবার জানাজা হবে। আসরের পর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
Leave a Reply