প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি দমনের মতো চাঁদাবাজদেরও কঠোরভাবে মোকাবেলা করছেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী সব রকম তথ্যই পাচ্ছেন। দলীয় লোকের বাইরেও তার নিজস্ব সেল রয়েছে। সুতরাং যত বড় প্রভাবশালী নেতা বা ব্যক্তিই হোন না কেন; কোনোভাবেই ছাড় পাবেন না। প্রধানমন্ত্রী এ ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছেন।’
গতকাল সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে বিআরটিসি কার্যালয়ে ‘বিআরটিসির চলমান এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রম’ সম্পর্কে মতবিনিময় সভার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। সভায় বিআরটিসির চেয়ারম্যান এহসান ই এলাহীসহ সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারাও অংশ নেন। ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, দলীয় লোকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলে শুধু দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থাই নয়; আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও ব্যবস্থা নিতে বলা হবে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যেসব যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যুবলীগ নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে। সংকট ও অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে শুনানিরও ব্যবস্থা করেছে। এটি ভালো ও শুভ উদ্যোগ। আওয়ামী লীগ যুবলীগের এই ট্রাইব্যুনালকে পর্যবেক্ষণ করছে। ছাত্রলীগের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের কমিটি করেছেন, নতুন দুইজনকে তিনিই দায়িত্ব দিয়েছেন। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সেটাও তিনি ঠিক করবেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে দেখছেন।
বিআরটিসির দুর্নীতিবাজদের সরানো হবে :বিআরটিসিতে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা যতই অভিজ্ঞ হোক, তাদের প্রয়োজন নেই। বিআরটিসিকে লাভজনক করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিআরটিসিকে লাভজনক করার ক্ষেত্রে ডিপো ম্যানেজাররা কতটা আন্তরিক, সে বিষয়ে শঙ্কা রয়েছে। তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। বিআরটিসি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে মন্ত্রী কাদের বলেন, কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিআরটিসিকে নতুন নতুন বাস দেওয়া হয়েছে। এগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। বাসগুলোর দিকে তাকানো যায় না। ডাবল ডেকার বাসগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। চেয়ারম্যান আসে চেয়ারম্যান যায়; পুরনো গাড়িগুলোর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। কর্মচারীদের বেতন বকেয়া থাকে। এ অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। তিনি বলেন, এখানে কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের চেয়ে নিজের পকেট উন্নয়নে ব্যস্ত থাকেন। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিআরটিসির কর্মীরা বেতন পাচ্ছে না- এ ধরনের কথা আগামীতে আর শুনতে চান না বলে জানান তিনি।
সেতুমন্ত্রী কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ার করে বলেন, জনগণ যাতে ভালো সেবা পায়, সেদিকে গুরুত্ব দিন। ঈদের সময় বিআরটিসির গাড়িগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও গাড়ি ইজারা এখন থেকে বন্ধ করতে হবে। যত বড় প্রভাবশালীই হোক না কেন, কাউকে গাড়ি ইজারা দেওয়া যাবে না। হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো যাবে না।
Leave a Reply