এদিকে বুধবার রাতের মাইকিং শুনে উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দোকানে ভিড় করেছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে রাখার জন্য।
বসুন্ধরা আবাসিকের একটি অংশ ভাটারা, অন্য অংশ বাড্ডা থানার মধ্যে পড়েছে।
ভাটারা থানার ওসি মোকতারুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, লকডাউন ঘোষণা হলে তা বাস্তবাায়নের জন্য তারা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। তবে সেরকম কোনো নির্দেশনা এখনও তারা পাননি।
“আমরা নিজস্বভাবে আলোচনা এবং প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হলে কাজও শুরু হবে। তবে তার আগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সাথে বৈঠক হবে।”
আর বাড্ডা থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বৃহস্পতিবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লকডাউন শুরুর বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, কোনো চিঠিও পাইনি। তবে ঘোষণা হলে আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে “
স্থানীয় ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ঢালি জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশন থেকে তারা প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য চিঠি পেয়েছেন, লকডাউন ঘোষণার কোনো সিদ্ধান্ত পাননি।
“আমরা চিঠি পাওয়ার পর আজ বেলা সাড়ে ১১টায় স্থানীয় কমিটি আর বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে বৈঠক করার কথা ছিল। তবে সেটা হয়নি, পরে হবে।”
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মধ্যে ওই ৪০ নম্বর ওয়ার্ড ঘিরেই লকডাউন জারির কথা আলোচনা শুরু হয় বুধবার রাত থেকে। সুলমাইত, হাসেরটেক, সাঈদনগর ও কোকাকোলা এলাকা রয়েছে এর মধ্যে।
স্থানীয় ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নামে মাইকিং করে বলা হয়, ‘বৃহস্পতিবার রাত ১২টার থেকে’ সেখানে লকডাউন কার্যকর করা হবে।
২১ দিনের জন্য এই লকডাউনের খবরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে শুরু হয় তোড়জোড়। ভাটারা ও বাড্ডা থানা এলাকার বাসিন্দারা অনেকেই দোকানে ছোটেন কেনাকাটা সারতে।
রাজিয়া সুলতানা নামের এক গৃহবধূ বলেন, “এবারের লকডাউন নাকি কারফিউয়ের মত হবে। এটা শুনে সব কেনাকাটা করে রাখছি।”
তবে লকডাউন শুরুর ওই সময় ঠিক নয় জানিয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ডিএনসিসির আওতাধীন কোন এলাকার কোন কোন অংশ রেড জোনের আওতায়, তার বিস্তারিত ম্যাপিং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানোর পরই লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
“স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্টভাবে কোন কোন এলাকা লকডাউন করা হবে তা এখনো পাওয়া যায়নি। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য “
বিবৃতিতে বলা হয় বুধবার ৪০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ঢালী বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করা হলে তা বাস্তবায়ন করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে একটি সভা করেছিলেন।
“এ সময় অতি উৎসাহী কেউ কেউ মাইকে লকডাউনের ঘোষণা দেন। নজরুল ইসলাম ঢালী বলেন, এটি সম্পূর্ণ ভুল বোঝাবুঝি। এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর লকডাউন বাস্তবায়নের প্রস্তুতির বিষয়ে যে প্রাথমিক নির্দেশনা দিয়েছে, তাতে কোনো এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে বিধিনিষেধ জারি হলে সেখানে সব ধরনের মার্কেট, শপিং মল বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে।
তবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য নিদিষ্ট সময় কিছু দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিতে পারবে স্থানীয় প্রশাসন।
ঢাকার যে ৪৫টি এলাকা রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হল-
ঢাকা দক্ষিণ
যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, মুগদা, গেন্ডারিয়া, ধানমন্ডি, জিগাতলা, লালবাগ, আজিমপুর, বাসাবো, শান্তিনগর, পল্টন, কলাবাগান, রমনা, সূত্রাপুর, মালিবাগ, কোতোয়ালি, টিকাটুলি, মিটফোর্ড, শাহজাহানপুর, মতিঝিল, ওয়ারী, খিলগাঁও, পরীবাগ, কদমতলী, সিদ্ধেশ্বরী, লক্ষ্মীবাজার, এলিফ্যান্ট রোড, সেগুনবাগিচা।
ঢাকা উত্তর
বসুন্ধরা, গুলশান, বাড্ডা, ঢাকা সেনানিবাস, মহাখালী, তেজগাঁও, রামপুরা, আফতাবনগর, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, মগবাজার, এয়ারপোর্ট, বনশ্রী, রায়েরবাজার, রাজাবাজার, উত্তরা, মিরপুর।
Leave a Reply