সুমন মল্লিক বিশেষ প্রতিনিধি :
ভান্ডারিয়ার বোথলা পশ্চিম পশারীবুনিয়া গ্রামের কৃষক মোঃ কবির সিকদারের নেতৃত্ব কৃষিতে বিপ্লব ? স্থানীয় কৃষকদের কাছে জানা যায় যে, কবির সিকদার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকুরী করতেন। তিনি ২০১২ সালে অবসরে এসে স্থানীয় ৩০ জন কৃষক এবং যুবক ভাইদের নিয়ে কৃষক সংগঠন করেন। মোঃ কবির সিকদার সেনাবাহিনীতে চাকুরীরত অবস্থায় বিভিন অঞ্চলে কৃষি মাঠ দেখেছেন, বিশেষ করে উত্তর অঞ্চলে একই মাঠে ৩-৪ টি ফসল ঘরে তোলেন কৃষক ভাইরা। তার ধারাবাহিকতায় কবির সিকদার ও তার সংগঠনের কৃষকদের নিয়ে ২০১৬ সালে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে ৩০ বিঘা জমিতে মুগ ডাল ও অন্যান্য ফসল চাষ করেন। মুগ ডালে ভালো সাড়া পেয়ে ২০১৭ সালে ১০০ বিঘা জমিতে মুগ ডাল অন্যান্য ফসল চাষ করেন। এতে প্রতি কৃষক ২০-৩০ মন মুগ ডাল ঘরে তোলেন, এবং অর্থনৈতিক ভাবে কৃষকরা লাভবান হন। ২০১৮ সালে কৃষক সংগঠনের সদস্য বৃদ্ধি পায় এবং ২০০ বিঘা জমিতে মুগ ডাল, ভুট্টা, আলু মরিচ, মিষ্টি আলু এবং নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য ফসলেরও চাষ করেন। এতেও ব্যাপক মুগ ডাল ঘরে তোলেন এবং ইঅউঈ বরিশালকে ২০০ মন মুগ ডাল বীজ হিসাবে বিক্রি করেন এবং অত্র সংগঠনের কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়। ২০১৯ সালে আরও জমি বাড়িয়ে অর্থ্যাৎ ৪টি মাঠে মুগ ডাল এবং অন্যান্য ফসলের আবাদ করেন এতে ফনি পানিতে ক্ষতি হওয়ার পরেও ৩০০ মন মুগ ডাল ইঅউঈ বরিশালে বীজ হিসাবে বিক্রি করেন। এবং প্রচুর পরিমাণে ভুট্টা ফসল পেয়ে থাকেন। স্থানীয় কৃষকদের কাছে আরো জানা যায় যে, ঐ এলাকার কৃষকরা নতুন ফসলের আবাদ করার জন্য কৃষক নেতা মোঃ কবির সিকদার ট্রেনিং পাবার জন্য বিভিন অঞ্চলে গমন করেন। প্রশিক্ষণ পেয়ে ২০২০ সালে মুগ ডালের পাশাপাশি নতুন ফসল পিয়াজ, সয়াবিন, সূর্যমূখী, রসুন, মিষ্টি আলু, ভুট্টা এবং আলু চাষ করেন। কবির সিকদারের কৃষক সংগঠনের অন্যান্য কৃষক যাদের কে মাঠে পাওয়া গেছে কৃষক মজিবর হাওলাদার , মনোয়ার হোসেন মন্টু হাওলাদার, লাভলু হাওলাদার ও দুলাল জোমাদ্দার এদের সাথে মাঠে কথা বললে, তারা বলেন আমাদের এই সমস্ত মাঠে কখনো রবি শস্য হইত না শুধু আমরা ধান ফসল পেতাম। এখন, ৪ বছর ধরে এই কবির সিকদারের নেতৃত্বে আমরা মাঠে রবি শষ্য চাষ করি। কবির সিকদার সেনাবাহিনীতে চাকুরী করতেন অবসরে এসে আমাদেরকে নিয়া সংগঠন সংগঠিত করেন, তিনি একজন ভালো মানুষ এবং নীতিবান। এই সংগঠনের একজন চাষী লাভলু হাওলাদার তিনি বলেন, যে কবির সিকদার আমার এলাকার বড় ভাই তার নেতৃত্বে এই রবি শষ্য চাষ করে আমি ৬ কাঠা জমি ক্রয় করছি। পশ্চিম পশারীবুনিয়া গ্রামের কৃষি মাঠের যিনি দায়িত্বে আছেন উপ- সহকারি কৃষি কর্মকর্তা জনাব মইনুল হুদা তার সাথে কথা বললে, তিনি বলেন আমার চাকুরী শুরু থেকে এই ব্লকে আছি, তবে এখানে কোনদিন রবি শস্য হতো না। আমার পরামর্শে এবং কবির ভাইয়ের নেতৃত্বে ১টি কৃষক সংগঠন তৈরি করেন। কবির ভাইয়ের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এখান চাষীরা অর্থনৈতিক ভাবে অনেক লাভবান হয়েছে এই সংগঠনের চাষীরা অনেকেই প্রতি বছর ৮০ হাজার ৬০ হাজার ১ লক্ষ টাকার মুগ ডাল বিক্রি করেন। আমরা ভান্ডারিয়া কৃষি অফিস সার, বীজ, এবং ট্রেনিং দিয়ে সহায়তা করি, উপ- সহকারি কৃষি অফিসার মইনুল হুদা সাহেব আরো বলেন, এই মাঠে জেলা উপ- পরিচালক মহোদয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহোদয়, এবং বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসেন। সংগঠন নেতা মোঃ কবির সিকদার বলেন যে, কৃষির নতুন জাত আসবে ইনসাআল্লাহ আমরা চাষ করে আমি এবং আমার সংগঠনের কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হইব। কবির সিকদার আরো বলেন, আমার কৃষক সংগঠন পরিদর্শন করার জন্য ডেনমার্কের কৃষি ডেলিগেট ব্রাদার খালিদ এবং তার সফর সঙ্গীরা পরিদর্শন করেন এবং সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এটাই আমার স্বপ্ন, এটাই আমার পাওয়া।
বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত কে শক্তিশালী করার জন্য, আমরা যেন সবাই মাঠে সততার সাথে কাজ করি এটাই আমার দেশ বাসীর কৃষক ভাইদের কাছে বিনয়ের সাথে চাওয়া।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কবির সিকদার এখন অনেকের জন্যই উদাহরণ, কৃষি কাজ যে লাভজনক পেশা এবং সফল হওয়া যায় তা করিব সিকদারকে না দেখলে বোঝা যাবেনা । তাকে দেখে অনেক শিক্ষিত মানুষ কৃষি কাজে উৎসাহিত হচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি কৃৃষি বিভাগের পরামর্শে মুগ ডাল, সূর্যমূখী, ও পিয়াজ চাষ শুরু করেছেন এবং তাতে ভালো ফল পাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে তাকে সব ধরনের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply