গলাচিপা-পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার আলীপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম আলীপুরা গ্রামের মোতালেব মৃধার ছেলে মামুন মৃধা ঢাকার কবি নজরুল সরকারী কলেজে অনার্সের ছাত্র ছিলেন। তার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর।
ছাত্রলীগ কর্মী মামুন মৃধা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্য সামনে থেকে শুনতে ওইদিন জনসভায় গিয়েছিলেন। গ্রেনেড হামলায় অন্যদের সঙ্গে তিনিও নিহত হন। হত্যা বার্ষিকীর দিনে নিহত মামুন মৃধার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আসা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আখম জাহাঙ্গীর হোসাইনকে কাছে পেয়ে নিহত মামুনের বাবা মোতালেব মৃধা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আখম জাহাঙ্গীর হোসাইনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি আমার এ দাবি জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেবেন। হত্যাকারীদের ফাঁসি হলেই কেবল আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে।
আমার পরিবার শান্তনা পাবে। আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন এ সময় মোতালেব মৃধাকে আশ্বশÍ করে বলেন, জননেত্রী নিরলস ভাবে অনেক কিছু করার চেষ্টা করছেন। আশা করা যায় শিগগির পৈচাশিক এ হত্যাকান্ডের রায় কার্যকর হবে। জননেত্রী আগেও যেমন আপনাদের পাশে ছিলেন, আগামিতেও তিনি আপনাদের পাশে থাকবেন। গলাচিপা ও দশমিনা এলাকার দলীয় নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন গ্রেনেড হামলায় নিহত মামুন মৃধার সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় মামুন মৃধার আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া মোনাজাত করা হয়। আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন পরে মামুন মৃধার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ একান্তে কথা বলেন। এ উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ মামুন মৃধার কবরের পাশে রাস্তার ওপর শোকসভা ও মিলাদের আয়োজন করে।
আলী হোসেন মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোকসভায় আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন ছাড়াও গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক সন্তোষ কুমার দে, দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ লিটনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। শোক সভায় মামুন মৃধার লাশ উদ্ধারের বর্ণনা দিয়ে আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ওইদিন হাসপাতালে লাশের স্তুপ জমেছিল। অনেক লাশ শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। মামুন মৃধার পকেটে একটি নাম ঠিকানা লেখা চিরকূট পাওয়া যায়। যা দিয়ে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরেরদিন অনেক কষ্টে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌছে দেয়া হয়।
মামুনের বাবা মোতালেব মৃধা বলেন,‘আমার বুকের ধন নিরাপরাধ ছেলে মামুনসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাকর্মীদের যারা প্রকাশ্য জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে, অবিলম্বে তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হোক, এটা আমার এ মুহুর্তের একমাত্র দাবি। এর বেশি কিছু আর চাই না। ষোল বছর ধরে অপেক্ষা করছি বিচার পাওয়ার আশায়। বুকের মধ্যে শোকের পাথর বয়ে বেড়াচ্ছি। আদালতের বিচার ও রায় হয়েছে। এখন সে রায় কার্যকর চাই। নিজ চোখে হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখতে চাই। এর মধ্য দিয়ে মামুনের আত্মার শান্তি চাই।
Leave a Reply